হোয়াটসঅ্যাপ কখনোই নিরাপদ ছিল না, কখনও হবে না

হোয়াটসঅ্যাপ কখনোই নিরাপদ ছিল না, কখনও হবে না

সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপের অপকর্ম বেশি করে সামনে এসেছে। তবে আগেও হোয়াটসঅ্যাপ ভাল কিছু ছিল না। অন্য মেসেজিং সার্ভিসগুলোর চেয়ে অনেক খারাপ। ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ থাকা মানে সাথে একজন গুপ্তচর রাখা। কেতাবি ভাষায় স্পাইওয়্যার। 1

শুধু তাই নয়, হ্যাকারদের বিপক্ষে হোয়াটসঅ্যাপের সুরক্ষা দরজা অত্যন্ত নাজুক। দক্ষ হ্যাকার শুধু একটি ভিডিও কলের মাধ্যমেই ফোনের অ্যাক্সেস পেয়ে যেতে পারে। 2

হোয়াটসঅ্যাপ দাবি করে তারা ব্যবহারকারীদের বার্তা সুরক্ষিত রাখে। কিন্তু আসলেই থাকে কি না সেটা যাচাই করার কোনো উপায় নেই। টেলিগ্রাম অ্যাপের কথা ধরুন। তাদের কোড ওপেনসোর্স। চাইলেই বিশেষজ্ঞরা কোড দেখে বুঝতে পারবেন মেসেজিং কতটা নিরাপদে হচ্ছে। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ ইচ্ছা করে কোড কৌশলে লুকিয়ে রাখে। অ্যাপের বাইনারি দেখেও কোডের নিরপাত্তা পুরোপুরি যাচাই করা সম্ভব নয়।

আরও ভয়ানক দিক হচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ ও এর মালিক ফেসবুক চ্যাটের মধ্যে একটি পেছন দরজা (backdoor) রেখে দিয়েছে। মানে, আপনার মেসেজ আপনি ছাড়াও অন্য কেউ অন্য পথে এসে দেখতে পারবে। [3] আর এক্ষেত্রে সেই অন্য কেউটা হলো মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। আসলে যুক্তরাষ্ট্রে বসে গ্রাহকদের জন্যে নিরাপদ কোনো সেবা দেওয়া সম্ভবই নয়। সে দেশের নীতিমালাটাই এমন। যেকোনো মূল্যে তাদেরকে মানুষের ওপর নজরদারি চালাতেই হবে। তাই তো পেছন দরজা খুলে রাখা।

২০১২ সাল পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ যেত প্লেইন টেক্সট আকারে। এর ফলে শুধু সরকারই নয়, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা ওয়াইফাই অ্যাডমিনও আপনার মেসেজ দেখতে পারত। 3

অতঃপর এল তথাকথিত এনক্রিপশন। মানে মেসেজকে দূর্বোধ্য করে তোলা যাতে হ্যাকার বুঝতে না পারে আসল মেসেজ কী ছিল। কিন্তু সরষের মধ্যে ভূত থেকেই গেল। মেসেজগুলোকে ডিক্রিপ্ট (আসল মেসেজ বের করা) করার উপায় বিভিন্ন দেশের সরকারকে জানাতে বাধ্য হলো তারা।

কয়েক বছর আগে এল তথাকথিত এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন। ভাল কথা। একই সাথে এল ক্লাউডে চ্যাট ব্যাকআপ রাখার ব্যবস্থা। মানুষ জানলও না, এই মেসেজগুলোকে রিস্টোর করলে আর এনক্রিপ্টেড থাকছে না। হ্যাকার বা সরকার পেছন দরজা দিয়ে এসে দেখে নিতে পারে চ্যাটের ইতিহাস। 4 যারা এভাবে ব্যাকআপ রাখেন না, তারাও কিন্তু নানাভাবে পড়তে পারেন তথ্যচুরির কবলে। 5

আসলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালার কারণেই হোয়াটসঅ্যাপ বার এর মালিক ফেসবুক কখনও গ্রাহকদের সুরক্ষা দিতে পারবে না।

তাহলে এখন উপায়? এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভাল বিকল্প টেলিগ্রাম। সিকিউরিটির দিক থেকে সবসময় সেরা ছিল অ্যাপটি। বিপও চেখে দেখতে পারেন। সিগন্যালের সিকিউরিটি ব্যবস্থাও হোয়াটসঅ্যাপের চেয়ে ভাল।

  1. https://www.businessinsider.com/whatsapp-hacked-attackers-installed-spyware-2019-5?r=US&IR=T 

  2. https://securitytoday.com/articles/2018/10/12/whatsapp-bug-allowed-hackers-to-hijack-accounts.aspx 

  3. https://web.archive.org/web/20110523235136/http://www.yourdailymac.net/2011/05/whatsapp-leaks-usernames-telephone-numbers-and-messages/ 

  4. https://www.independent.co.uk/life-style/gadgets-and-tech/news/whatsapp-update-latest-encrypted-messages-privacy-security-read-chat-a8510701.html 

  5. https://telegra.ph/Why-WhatsApp-Will-Never-Be-Secure-05-15 

comments powered by Disqus